ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের উদ্দেশে লেখা এক খোলাচিঠিতে চার শতাধিক সংগীতশিল্পী, লেখক ও শিল্পী স্বাক্ষর করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, উপযুক্ত সুরক্ষা না দিলে তাঁদের সৃষ্টিকর্ম প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কাছে ‘উপহার’ দিয়ে দেওয়ার মতো হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এ উদাসীনতার কারণে হুমকির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাজ্যের ‘সৃজনশীল সাম্রাজ্য’।
সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা চাই, আমাদের সৃজনশীল খাত ও এআই খাত একসঙ্গে বিকশিত হোক। সে লক্ষ্যেই আমরা এমন কিছু উদ্যোগের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছি, যা উভয় ক্ষেত্রের জন্য কার্যকর হতে পারে।’
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি, কোনো পরিবর্তন কেবল তখনই বিবেচনায় নেওয়া হবে, যখন আমরা নিশ্চিত হব, সেটি সৃষ্টিশীলদের জন্য ক্ষতিকর নয়।’
বিটলস তারকা স্যার পল ম্যাককার্টনিও চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি আগেই বিবিসিকে বলেছিলেন, এআই যে শিল্পীদের কাজ অনায়াসে নকল করতে পারে, এ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। তাঁদের দাবি, সরকার যদি ব্যারোনেস বিবান কিডরনের প্রস্তাবিত সংশোধনীটি সমর্থন করে, তবে এ উদ্বেগ অনেকটাই দূর হবে। সংশোধনীটি পাস হলে এআই নির্মাতা ও কনটেন্ট নির্মাতারা একসঙ্গে বসে কীভাবে কনটেন্ট লাইসেন্সিং হবে, তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
তবে সবাই শিল্পীদের এ অবস্থানকে সমর্থন করছেন না। সেন্টার ফর ব্রিটিশ প্রগ্রেস নামে থিঙ্কট্যাংকের সহপ্রতিষ্ঠাতা জুলিয়া উইলেমিন্স বিবিসিকে বলেন, এমন আইন কার্যকর হলে যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এ পদক্ষেপ বিদেশি কোম্পানিগুলোকে থামাতে পারবে না। উল্টো কঠোর কপিরাইট নীতিমালা এআই উন্নয়নকে দেশের বাইরে সরিয়ে দিতে পারে, উদ্ভাবন কমে যাবে এবং অর্থনীতির ক্ষতি করবে।’
তবে শিল্পীদের উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে, বিশেষ করে তাঁদের সৃষ্টি কপিরাইট-সুরক্ষিত কনটেন্ট এআই মডেল তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তি খাতে ব্যবহৃত জেনারেটিভ এআই এখন ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও এতে ব্যবহৃত ডেটা ও বিশাল পরিমাণ শক্তি চাহিদা নিয়ে বহু প্রশ্ন ও সমালোচনা উঠেছে। কপিরাইট আইন পরিবর্তনের প্রতিবাদে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অ্যানি লেনক্স, ডেমন অ্যালবার্নসহ একদল শিল্পী সাইলেন্ট অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন। তবে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে সরকার ওই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনায় নিয়েছে।