Auto Refresh and Link Loop

করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে ধোঁয়াশা আছে: আনু মুহাম্মদ

 



করিডর (রাখাইনে) নিয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা, অস্পষ্টতা ও স্ববিরোধিতা আছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, এতে বোঝা যাচ্ছে সরকার কিছু লুকাতে চাচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ভূরাজনৈতিক প্রশ্ন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন।

গোপনে যেকোনো চুক্তি সম্পাদন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে একটা খুবই ধোঁয়াশা আছে, অস্পষ্টতা আছে, স্ববিরোধিতা আছে। বোঝা যাচ্ছে তারা কিছু একটা লুকাতে চাচ্ছে। কিন্তু এই অবস্থার জন্য তো দেশে গণ–অভ্যুত্থান হয়নি। একটা গোপনে চুক্তি হয়ে যাবে এবং সেটা মানুষজন কিছুই জানতে পারবে না।’



অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব চুক্তি আছে, সেগুলো স্পষ্ট করতে হবে। আদানি চুক্তি নিয়ে সরকার কিছুই করেনি। এটা একটা ভয়ংকর চুক্তি। শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটা দেশে এই চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আদানির সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছিল, সেগুলো প্রকাশ করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল বলে মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, প্রকাশ করার পরে যে চুক্তিগুলো জাতীয় স্বার্থবিরোধী, সেগুলো কীভাবে বাতিল করা যায়, সেটা একটা জাতীয় আলোচনার মধ্যে আনাটা ছিল তাদের সংস্কারের প্রথম কাজ।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, করিডরের সঙ্গে যেহেতু সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত, তাই এই প্রশ্নটিকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবু মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার জন্য তো অনেক বিকল্প পথ আছে। করিডর, নিউমুরিং টার্মিনালের বিষয়গুলো যেহেতু দেশের জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট, তাই এই বিষয়কে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে গণশুনানির প্রয়োজন রয়েছে।

সভায় বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘জনগণ প্রত্যাশা করেছিল রক্তাক্ত জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জন–আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথেই সরকার হাঁটবে। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ভূরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যা তাদের এজেন্ডা হওয়া উচিত নয়।’

মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার। আরও বক্তব্য দেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য আসলাম খান প্রমুখ।


Post a Comment

Previous Post Next Post

Follow us

Blogger Template